আইনের কারাগারে মানসিক স্বাধীনতার যুদ্ধ

নির্বাচন মানে ক্রিমিনালদের উৎসব, কারণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের মদতে যারা অপরাধী, তাদেরই মনোনয়ন নিশ্চিত। দলীয় ‘শুদ্ধি অভিযানে’ কে আসলেই শুদ্ধ? ফেনীর খ্যাতিমান অপরাধী জয়নাল হাজারীর বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিয়ে তাকে “ধোয়া তুলসী” বানিয়ে ফেলা হয়েছে। কোনো বিচার নেই, কোনো শাস্তি নেই, শুধু ক্ষমতার উল্লাস। এটা কী ধরনের আইনের ব্যবস্থা?

এই দেশে অপরাধীর শাস্তি না হয়, বরং অপরাধকে উৎসাহ দেয়া হয়। দুর্বৃত্তরা এখন নিরাপদ আওয়ামী আশ্রয়ে। আন্তর্জাতিক বিবেচনায় বাংলাদেশ দুর্নীতি ও অপরাধপ্রবণ দেশের তালিকায় জায়গা পেয়েছে, বিশ্বে নাম আঙুল দিয়ে দেখানো যায়! আমারও এই নিয়ে অনেকদিন লেখালেখি হচ্ছে, কিন্তু পরিবর্তন কিছুই আসছে না।

কিন্তু সবচেয়ে কুৎসিত এবং সমাজ-বিদ্বেষী ঘটনা, এইসব দুর্নীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় গরিব, শ্রমজীবী মানুষরা। ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে কোনো আত্মসমালোচনার ছিটেফোঁটাও নেই। জোটের শরিকরা সুবিধা নেয়, মাঝে মাঝে সমালোচনার নাটক করে, আবার জোটের সুবিধাভোগী হিসেবেই থেকে যায়। জনগণ এখন তাদেরকে সুবিধাবাদী হিসেবেই বিচার করে।

প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকার দলের নেতা আবদুর রাজ্জাকের চিকিত্সার জন্য লন্ডনে এক টাকা দেয়নি; তার মৃত্যুই হলো সরকারের উদাসীনতার বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু লেখক হুমায়ূন আহমেদের চিকিত্সায় বিপুল অর্থ দান – এটা কি জনগণের টাকা না নিজের পকেটের? স্বনামধন্য কেউ যখন সরকারের অনুদান নেয়, তখন গরিব মানুষের চিকিত্সার জন্য একটা ব্যবস্থা কি হচ্ছে? আত্মসম্মানবোধ, নৈতিকতা, সব আজ ব্যবসার পণ্য।

আইন আর দুর্নীতি আজ একই ধান্দায়, লুটপাট, ক্ষমতার দামি দরজা, সাধারন জনগণের হাহাকার। প্রশাসন চোখ বুজে আছে, ক্ষমতা টাকা দিয়ে বাজার চালাচ্ছে। আইনের শাসন অন্ধ, প্রভাবশালীরা আরও শক্তি পাচ্ছে, গরিবেরা আরও অভুক্ত থাকছে। মধ্যবিত্তরা দোটানার চক্রে পিষে যাচ্ছে, অথর্ব প্রশাসন শুধু নিজের আখের গুছাচ্ছে। কোথাও বিচার নেই, শুধু দুর্নীতির উৎসব! ছাত্রলীগ-যুবলীগ ফুলে ফেঁপে উঠছে এই বিবর্ণ বেহাল বাংলাদেশের গায়ে!]